বগুড়ায় সেশন ফি’র নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিবাদে প্রথমবারের মত অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠিত অভিভাবক সমাবেশ থেকে উচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করে বগুড়ার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত সেশন ফি আদায় করা হলে চিহ্নিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মর্সূচি পালনে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
শনিবার বগুড়া শহরের সাতমাথায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন আদালতে রিটকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুকরা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর ও বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ও বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক আব্দুল মান্নান আকন্দ।
সমাবেশে আব্দুল মান্নান আকন্দ তার অভিব্যাক্তি জানিয়ে সমাবেশে বলেন, বগুড়া সহ সারা দেশের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বছরের শুরুতেই ভর্তির সময়ে সেশন ফি’র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিন-চার গুন অর্থ গ্রহণ করেছে। যেখানে ’নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালায় মফস্বল এলাকায় সেশন ফি ৫শত টাকা, পৌর ও উপজেলা এলাকায় ১হাজার টাকা, পৌর ও জেলা সদর এলাকায় ২ হাজার টাকার বেশি হবে না বলা হলেও কোন কোন প্রতিষ্ঠান এই নিয়ম মানছে না।
আব্দুল মান্নান আকন্দ,রোববার দুপুরে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম জানিয়ে বলেন,নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষে আইনগত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে অভিভাবকদের সাথে নিয়ে বগুড়ার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত সেশন ফি গ্রহণ করবে সে সব প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে। তিনি ঘোষণায় আরো বলেন,জানুয়ারী মাসের ১ তারিখ থেকে বগুড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে কোন প্রকার অব্যবস্থা মেনে নেয়া হবে না।
শিশির মোস্তাফিজের সঞ্চালনায় এ সময় অভিভাবক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন,উচ্চ আদালতে রিটকারি এ্যাড. মোশারফ হোসেন মসির,বগুড়ার সাবেক মেয়র এ্যাড. রেজাউল করিম মন্টু,আলোকিত বগুড়ার নির্বাহী পরিচালক এ্যাড.ফেরদৌসী আক্তার রুনা,আবু তালেবুল হাসান,অসীম কুমার রায়, আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তাগণ এসময় বলেন, লুটপাটের সমস্ত জায়গা শেষ করে এখন শুরু করা হয়েছে শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা। গত বছর বগুড়া জেলার সকল স্কুল ও কলেজ সমূহে সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে সেশন ফি’র নামে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করা হয়।
এ ঘটনায় আব্দুল মান্নান আকন্দ বাদী হয়ে বগুড়ার ৬টি বিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত জুলাই মাসে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা জারি করেন। বিজ্ঞ আদালত বগুড়া জেলা প্রশাসককে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলেরও আদেশ দেন। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ১৭ ডিসেম্বর একটি পূর্নাঙ্গ রায় প্রদান করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয় সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কোন অবস্থাতে জেলা সদরে ২ হাজার টাকার বেশি সেশন ফি নেয়া যাবে না। হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিষয়টি এখন অবধি কার্যকর না হওয়ায় অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।সমাবেশে বিপুল সংখ্যক অভিভাবক গন উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply