শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

ইতিহাসের খোঁজে ঘুরে আসুন পাহাড়পুর বিহার

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯
  • ২৪২১ ভিউ টাইম

বাংলাদেশের তথা ভারতীয় উপমহাদেশীয় ইতিহাসে পাহাড়পুর একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এই উপমহাদেশের হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে এই নিদর্শন। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষাংশে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম ও শিল্পচর্চা কেন্দ্র ছিল। নওগাঁ শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। এটি অনেকের কাছে সোমপুর বিহার নামেও পরিচিত।অনেকের মতে, বহুকাল ধরে পলি আর মাটি চাপা পড়তে পড়তে অনেকটা পাহাড়ের আকৃতি ধারণ করেছিল বলেই হয়তো এই স্থানটি কালে কালে পাহাড়পুর বিহার নামে পরিচিতি পেয়ে থাকতে পারে। অষ্টম ও নবম শতাব্দীতে পাল বংশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাজা ধর্মপাল ও তার পুত্র দেবপাল বাংলা, বিহার এবং কনৌজ পর্যন্ত বিরাট সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান ছাড়াও চীন, তিব্বত, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। সেই সোমপুর বিহারের ভিক্ষুরা নালন্দা, বুদ্ধগয়া প্রভৃতি বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থানে অর্থ ও ধণরত্ম দান করতেন বলে বিভিন্ন লিপিতে উল্লেখ করা আছে। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে।যে কারণে বিখ্যাত পাহাড়পুর বিহার: এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম বিহার হল পাহাড়পুর বিহার। পুরো বিহারটা ঘেরা ছিল ইটের বেষ্টনী দিয়ে। বিহারের মূল বেষ্টনীর যে দেয়ালটি পাওয়া গেছে তা ২০ ফুট চওড়া। বেষ্টনীর ভিতরে আরো ছোট ছোট অনেক মন্দির আছে। মূল মন্দিরের চারপাশে রয়েছে ১৭৭ টি কামড়া। সেখানে ভিক্ষুরা বাস করতেন বলে অনুমান করা হয়। প্রায় ৮ শ জন ভিক্ষুর বাসোপযোগী ছিল এই বিহার। প্রত্যেকটি কক্ষে প্রবেশের জন্য আছে ছোট ছোট দরজা। খননকালে ১২৫ টি মাটির পাত্রে খলিফা হারুন আল রশিদের শাসনামলের রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলো পাহাড়পুর সংলগ্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়াও পাহাড়পুর বিহার হতে উদ্ধারকৃত অনেক মূর্তি, মুদ্রা, শিলালিপি ইত্যাদি পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

সন্ধ্যাবতীর ঘাট: বিহারের দক্ষিণ -পূর্ব কোণ থেকে প্রাচীরের বাইরে শানবাঁধানো ঘাট আছে। এই ঘাট সন্ধ্যাবতীর ঘাট নামে পরিচিত। রাজা মৈদলনের কন্যা সন্ধ্যাবতী এ ঘাটে নিয়মিত স্নান করতেন। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ঘাটটি ঢালু হয়ে প্রায় ১২মিটার নিচে নেমে গিয়েছে। গন্ধেশ্বরী মন্দির: স্নানঘাট পশ্চিমে পূর্বমুখী প্রাচীরের বাইরে একটি মন্দির আছে। মন্দিরের দক্ষিন দেয়ালে বৌদ্ধদেবী পদ্মপাণির মূর্তি আছে। এটিকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় গন্ধেশ্বরীর মন্দির।

সত্যপীরের ভিটা: সত্যপীরের ভিটা, পাহাড়পুর বিহার থেকে ৩৬৫ মিটার পূর্বে অবস্থিত। মন্দির অঙ্গনের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০টি পোড়ামাটির ফলক, আট হাত বিশিষ্ট দেবীমূর্তি ও বৌদ্ধ ধর্মীয় মতবাদ লিপি খোদিত পোড়ামাটির গোল সীলগুলি থেকে এই ভিটা ও তারা মন্দিরের অভিন্নতা প্রতিপন্ন হয়েছে।

বেড়ানোর সময়কাল: শীত মৌসুমে নওগাঁর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে পর্যটকদের ঢল নামে। এ সময়ে আসাটা উত্তম। এছাড়াও বছরের যেকোন সময়ে ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়পুর। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকে। এবং সোমবার অর্ধদিবস এবং যে কোন ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকে।

যেভাবে যাবেন পাহাড়পুর বিহারে: দেশের যেকোনো প্রান্ত হতে নওগাঁ শহরে এসে নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায়। আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিলোমিটার এবং বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা। অথবা দেশের যেকোন প্রান্ত হতে জয়পুরহাট শহরে এসে বাস অথবা অটোরিকশা নিয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার চলে আসতে পারবেন। জয়পুরহাট হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। ট্রেন যোগে জয়পুরহাটের জামালঞ্জ স্টেশনে নামলে এখান হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে আসতে চাইলে আপনাকে ভ্যান অথবা অটোরিকশা নিতে হবে। জামালগঞ্জ হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888