শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

২০১৭ সালে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শেয়ার ছিল সাড়ে ছয় শতাংশ। ২০১৮ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক চার শতাংশ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১০৭৭ ভিউ টাইম

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ভিয়েতনাম। গত কয়েকবছরে এ খাতে দেশটির উত্থান চোখে পড়ার মতো। পোশাক খাতের বড়ো রপ্তানি-কারক চীনের শ্রমিক মজুরি বেশি হওয়ার কারণে সেখান থেকে উদ্যোক্তারা ভিয়েতনামে কারখানা সরিয়ে নেন। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের কয়েকজন উদ্যোক্তাও ভিয়েতনামে কারখানা গড়ে তুলেছেন। বর্তমানে সেখানকার সবচেয়ে বড়ো গার্মেন্টস কারখানাটি একজন বাংলাদেশির। যদিও ঐ কারখানা স্থাপনের মূলধন বাংলাদেশ থেকে যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ডপত্রে এর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

শুধু ভিয়েতনাম নয়, বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের একটি শ্রেণি এখন মহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আফ্রিকায়ও বিনিয়োগ করছেন। এক্ষেত্রে ইথিওপিয়া অনেকের কাছে প্রথম পছন্দ। বস্ত্রখাতের অন্যতম কাঁচামাল তুলা এবং মেশিনারিজ এর প্রায় সম্পূর্ণটা আমদানি নির্ভর হওয়ায় এ খাতের অনেক উদ্যোক্তা এখন বাইরে বিনিয়োগ করার জন্য মরিয়া। এতে করে বিরাট এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশের বস্ত্রখাত।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, চীনা উদ্যোক্তারা গত কয়েকবছরে ভিয়েতনামে ব্যাপক হারে তাদের কারখানা সরিয়েছেন। এছাড়া ভিয়েতনামকে প্রদত্ত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সুবিধার কারণে দেশটির পোশাক রপ্তানি গত কয়েকবছরে বেশ বেড়েছে। গত কয়েকবছরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস রপ্তানি সামান্য বাড়লেও আন্তর্জাতিক বাজারে শেয়ার ক্রমেই কমে আসছে। ২০১৭ সালে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শেয়ার ছিল সাড়ে ছয় শতাংশ। ২০১৮ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক চার শতাংশ। অপরদিকে, ২০১৭ সালে বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামের তৈরি পোশাকের মার্কেট শেয়ার ছিল পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ। ২০১৮ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক দুই শতাংশে।

ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্যমতে, বর্তমানে তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজার ৪২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। অবশ্য এ মার্কেটের সিংহভাগ দখল করে আছে চীন। ২০১৭ সালে মোট বাজারের প্রায় ৩৫ শতাংশ দখল করেছিল চীন। ২০১৮ সালে এসে তা সাড়ে ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দেশ ভারতের মার্কেট শেয়ারও ক্রমেই কমে আসছে। তুরস্কেরও একই অবস্থা। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তারা বাণিজ্যসুবিধা নেওয়ার জন্য ভিয়েতনামে বিনিয়োগ স্থানান্তর করায় দেশটির রপ্তানি বেড়েছে। এছাড়া ভিয়েতনামের সঙ্গে ইরোপিয়ান ইউনিয়ন মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করার ফলে দেশটির প্রতি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মোট ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখা গেছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যাবার অন্যতম কারণ হচ্ছে লিড টাইম (পণ্য সরবরাহের সময়সূচি) বেশি হওয়া, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার উচ্চমান এবং বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাব্য পরিণতি মোকাবিলায় চীনা উদ্যোক্তাদের কারখানা ভিয়েতনামে স্থানান্তর। অপরদিকে, পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভিয়েতনামের লিড টাইম কম হওয়া, উন্নত অবকাঠামো, ভালো বন্দর সুবিধা, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সক্ষমতার কারণেও উদ্যোক্তাদের আগ্রহ ভিয়েতনামের প্রতি বেড়েছে।

 

এদিকে, ইথিওপিয়া গত কয়েকবছরে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। দেশটির সরকার পোশাক ও বস্ত্রখাতে এশিয়ান বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি এ খাত থেকে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশটিকে পুরোপুরি শিল্পায়িত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য নানা প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। বড়ো আকারের টেক্সটাইল মিল স্থাপনের জন্য নানা সুবিধা সম্বলিত শিল্পপার্ক স্থাপন করেছে দেশটি। প্রধান সমুদ্রবন্দরকে গতিশীল করতে বাড়তি বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানকার টেক্সটাইল মিল স্থাপনের জন্য শতাধিক বিদেশি কোম্পানি ভীড় জমিয়েছে। চীন, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশিরাও এ তালিকায় রয়েছেন। বাংলাদেশের বড়ো গার্মেন্টস কারখানা ডিবিএর গ্রুপ এ তালিকায় রয়েছে। চীনের বড়ো প্রতিষ্ঠান জিয়াংশু সানসাইন গ্রুপ ইথিওপিয়ার বস্ত্রখাতে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। বস্ত্রখাতের কাঁচামাল তুলার প্রাপ্যতা সহজ হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা দেশটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্টের তথ্যমতে, আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে এ হার ৪৬ শতাংশের বেশি।

এসব বিষয়ে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক ইত্তেফাককে বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বিশাল চাপের মধ্যে আছে। রপ্তানি কমছে। আমরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছি। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ মার্কিন ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার মান অবমূল্যায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের টাকা এক জায়গায় পড়ে আছে। ভিয়েতনাম এবং ইথিওপিয়ায় টেক্সটাইল খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এ দেশগুলো উদ্যোক্তাদের বিস্তর সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। তাদের অবকাঠামো খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে গত কয়েকবছরে। আর আমাদের এখানে উত্পাদন ব্যয় গত কয়েকবছরে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। উদ্যোক্তাদের সমস্যাগুলো সরকারের নীতিনির্ধারকদের জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাইকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। আমরা এখন কঠিন রোগে আক্রান্ত। মারা যাওয়া ছাড়া আমাদের আর গত্যান্তর নেই।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888