বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

রাজশাহীতে টিসিবির পেঁয়াজ ক্রয়ে ভোক্তাদের বিড়ম্বনা

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৪৪০ ভিউ টাইম

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাজারে উঠতে শুরু করেছে অপক্ত নতুন দেশি পেঁয়াজ। তবে এ পেঁয়াজের দামেও আগুন লেগেছে। গত কয়েকদিন ধরে টিসিবি খোলা বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলেও এর কোনো প্রভাবই পড়েনি লাগামহীন পেয়াঁজের বাজারে। নতুন পেঁয়াজ ওঠার দিন থেকেই দেখা যায় পেঁয়াজের কলিই বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি এবং আকার অনেক ছোট দেশী নতুন পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। অন্যদিকে আমাদানীকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৩০-২৪০ টাকা দরে। সোমবার লক্ষ্মীপুর, সাহেব বাজার ও কোর্ট বাজারে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায় পেঁয়াজের। এত দাম দিয়ে পেঁয়াজ করতে জনগণ হিমশিম খাচ্ছে। তাদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। সরকারীভাবে বার বার বলা হচ্ছে এই ৭দিন কিংবা ১০দিন পড়েই পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে। আবার বলা হচ্ছে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেই দাম কমতে শুরু করবে। কিন্তু এর বালাই নেই বাজারে। প্রতিদিন দাম বাড়তেই আছে। অথচ অন্য বছরগুলোর ইতিহাস বলে, বাজার নতুন দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেই পুরনো পেঁয়াজের দাম পড়ে যায়।
আজ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবি’র মাধ্যমে খোলা বাজারে আমদানীকৃত অনেক বড় বড় পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা যায়। গত ২৪ নভেম্বর (রোববার) সকাল থেকে মহানগরীর পাঁচটি পয়েন্টে নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এরমধ্যে সাহেব বাজার বড় মসজিদের সামনে পুলিশের পাহাড়ায় গতকাল পেঁয়াজ ক্রয় করতে দেখা যায় জনগণকে । নগরী বিভিন্ন পাড়া মহল্লার নারী পুরুষদের সাড়ি ধরে ঘন্টার ঘন্টার পর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এক কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করার জন্য। অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হয়রান হয়ে মাটিতেই বসে থাকতে দেখা যায়। পেঁয়্জা পেতে এত দেরী কেন জানতে চাইলে শামীমা নামে অর্ধ বয়সী এক নারী বলেন, বেলা উঠার পরেই এখানে ইট রেখে লাইনে জায়গা দখল করেছি। এর পূর্বেও অনেকে এসে এভাবেই ইট, কাগজ ও ব্যাগ রেখে লাইনে জায়গা দখল করে রেখেছিলো। এর পরেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি পেঁয়াজ সংগ্রহ করছেন। দেরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে এসে মেপে দেওয়া হচ্ছে পেঁয়াজ। মাপতে অনেক সময়ও পার করছে। যদি তারা পূর্বেই পেঁয়াজ মেপে রাখতো তাহলে এই সমস্যা কম হত।

আরেকজন ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, টিসিবি থেকে এক কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করতে তিন থেকে চার ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে তাঁর দিনটাই শেষ হয়ে গেল। কোথাও কাজেও তিনি যেতে পারবে না। এভাবে পেঁয়াজ না দিয়ে আগে থেকেই প্যাকেট করে রেখে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিলে সময় অনেক সাশ্রয় হত বলে জানান তিনি। তারমতই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আবুল হোসেন, শহিদুল্লাহ, কায়সার হোসেন, কলি, সিমা ও লাভলীসহ সকলেই একই কথা জানান এবং পূর্ব থেকে পেঁয়াজ মেপে প্যাকেট করে রাখার দাবী জানান। তারা আরো বলেন, লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দঁড়িয়ে থাকার ভয়ে এখন অনেকেই আসছেনা পেঁয়াজ ক্রয় করতে। এতে করে এই পেঁয়াজ কালো বাজারে বিক্রি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যাদের একেবারেই উপায় নেই এবং স্বল্প আয়ের মানুষগুলো এইভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ ক্রয় করছেন বলে উল্লেখ করেন তারা। আবার লাইন শেষ না হতেই পেঁয়াজ শেষ হয়ে যাচ্ছে বল জানান তারা।
দেশী নতুন পেঁয়াজ ওঠার খবরে লক্ষ্মীপুর কাঁচা বাজরে গিয়ে গিয়েছিলেন ভাটাপাড়ার আবু হেনা মোস্তফা কামাল ফটিক। কিন্তু দাম শুনে তিনি হতাশ। ক্ষোভের সঙ্গে এ ভোক্তা বলেন, সারা জীবন দেখে আসলাম নতুন পেঁয়াজ উঠলে পুরোনো পেঁয়াজের দাম কমে। নতুন পেঁয়াজের দামও থাকে কম। কিন্তু সবই পাল্টে গেছে। বাজারে অপরিপক্ক নতুন দেশী পেঁয়াজ দেখলাম ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই কেবল এই পেঁয়াজের দরদাম করে নতুন দেশী পেঁয়াজ না কিনেই বাড়ি ফিরছি। এর চেয়ে ২৪০ টাকা দরে পুরোনো পেঁয়াজ খাওয়াই অনেক ভালো। কেবল ফটিক নন, গতকাল নতুন পেঁয়াজ কিনতে এসে একই রকম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আরও অনেকেই। পেঁয়াজের বাজারে নজিরবিহীন এ অরাজকতা কবে নাগাদ থামবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভোক্তারা।

টিসিবির কার্যক্রম প্রসঙ্গে রাজশাহী জেলা প্রশাসক অফিস থেকে জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করছে। এ পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মনিটরিং করা হচ্ছে। টিসিবির পেঁয়াজ যদি কোনো ব্যবসায়ী বা বাজারের কোন দোকানে বিক্রি করতে দেখা যায়, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভ্রাম্যমান আদালত চেষ্টা করেও এর সুফল আনতে পারেনি ভোক্তাদের জন্য। ভ্রাম্যমান আদালত খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা করে নির্ধারণ করলেও তা মানছে না ব্যবসায়ীরা। গতকালও ২৩০-২৪০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা যায়।
টিসিবির রাজশাহী কার্যালয়ের আঞ্চলিক প্রধান প্রতাপ কুমার এর নিকট প্যাকেট করে পেঁয়াজ বিক্রি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গোডাইন থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করে আবার প্যাকেট করে বিক্রি করা সম্ভব নয়। এতে অনেক দেরী হয়ে যাবে। কারন মানুষের চাপ সামাল দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আর পেঁয়াজ পলেথিনের প্যাকেটে তুললে ঘেমে নষ্ট হবে। এছাড়াও ক্রেতারা ওজনে কম দেওয়ার কথাও বলতে পারে। চোখের সামনে মেপে দেওয়াতেও অনেকেই কম দেওয়ার কথা বলছেন। তবে যে পদ্ধতিতে চলছে সেটাই ভাল বলে জানান তিনি।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888