স্টাফ রিপোর্টার,চারঘাট: দামি কোনো বিখ্যাত ব্র্যান্ড কিংবা অখ্যাত সস্তা ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন কিনতে চাইলে যে কেউ নির্দিষ্ট কোনো বিপণিতে যাওয়ার কথাই ভাবেন। তবে এখন শুধু নামি-দামি শপিং মলেই নয়,রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী বাজারে মিলছে যে কোনো দামি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন।
উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের নন্দনগাছী বাজারে শুক্রবার ও সোমবার হাটের দিন গেলে যে কারও চোখ আটকে যাবে।একেবারে ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরেই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরাতন মোবাইল নিয়ে জমজমাট হাট বসে।কিন্তু কোনো মোবাইলেরই বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই।অধিকাংশ মোবাইল ফোনই চোরাই সিন্ডিকেটের বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিখ্যাত আইফোন থেকে স্যামস্যাং কিংবা হালের হুয়াওয়ে থেকে অপ্পো, হারিয়ে যেতে বসা নোকিয়ার বিভিন্ন মডেল কি নেই এই হাটে! ডিসপ্লে ভাঙাচোরা বিভিন্ন মোবাইল থেকে শুরু করে ঝকঝকে নতুন সবই মিলছে এখানে।দুর-দুরান্ত থেকে লোকজনের সমাগম ঘটে এ মোবাইল বাজারে।
শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, রাব্বানী নামে এক বিক্রেতা ০৫-০৬টি মোবাইল সেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। শাওমি, স্যামসাং সহ তার সবগুলোই দামি ব্র্যান্ডের ফোন। দামও জানালেন ৫-৬ হাজার টাকার মধ্যেই।
এতো কম দামের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটের দাম শুনে বুঝে নেওয়া উচিত এগুলো কেমন ধরনের সেট।এখান থেকে সেট কিনলে কোনো ধরনের ডকুমেন্টস পাওয়া যায় না। নিজের দায়িত্বেই কিনে নিতে হবে। কম দামে যারা দামি ব্র্যান্ডের সখ মেটাতে চান তারাই এখান থেকে সেট কেনেন বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাজারের এক চা বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন অনেক ধরনের মানুষ আসে এখানে পুরাতন মোবাইল বিক্রি করতে। তাদের দেখলেই বোঝা যায়, অনেকেই মাদকাসক্ত। এছাড়া, এখানকার স্থানীয় কিছু লোকের সঙ্গে মোবাইল চুরি পার্টির এক ধরনের যোগসাজস রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
পুরাতন মোবাইলের আরেক বিক্রেতা জানান, অনেকেই পুরাতন মোবাইল বিক্রি করতে আনেন। আমরা সেগুলো কিনে ঠিকঠাক করে বিক্রি করি। তারা কোথায় থেকে কিভাবে মোবাইল এনেছে সেটাতো আমাদের জানা সম্ভব না।
এ ব্যাপারে নন্দনগাছী বাজার কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন,আমি নিজেও শুনেছি এখানে চোরাই মোবাইল কেনাবেচা হয়।তবে মোবাইলের হাট বসে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে।সেজন্য আমার বাজার কতৃপক্ষ কিছু করতে পারিনা।
নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে পুরাতন ও চোরাই মোবাইলের হাট বসা সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন,বিষয়টা সম্পর্কে আমি অবগত না।তবে শুনেছি সেখানে নাকি মোবাইল কেনাবেচা হয়।আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই এরকমটা চলে আসছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নাজমুল হক বলেন,কোনো রকমের অবৈধ কাজ হতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply