ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়া সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেঘাগাছা পশ্চিমপাড়ায় রাতের আঁধারে একটি বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত্রি আনুমানিক ১০টার সময় পেস্তা নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই হামলা হয়েছে। এঘটনায় বগুড়া সদর থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী ও প্রতিবেশীদের নিকট থেকে জানা যায়, উক্ত গ্রামের মৃত আবেদ আলীর পুত্র পেস্তা মিয়া (৩০) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। ২ কন্যা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। কিন্তু একই গ্রামের আমসের আলীর পুত্র সাফী (২৭) এর সাথে মেঘাগাছা মৌজার ৭৯৫ দাগের ২১ শতাংশ জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত বিবাদ চলে আসছিলো। এমনকি গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেস্তা মিয়ার স্ত্রী গোলাপী বেগম (২৬) এর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এলাকার প্রভাবশালী সাফী।
এসময় বিবাদী সাফীর ডাকে আনসার, আরিফ, কামাল, শুভ, মিলন সহ আরো বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র সহ লাঠিসোঠায় সজ্জিত হয়ে গোলাপীকে একা পেয়ে তার উপর হামলা চালায় এবং প্রাননাশের জন্য লাঠি লোহার রড দিয়ে বেদম প্রহার করতে থাকে। লাঠির আঘাতে গোলাপী রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রতিবেশীদের ডাকতে থাকে। আহত গোলাপীর আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা জমির দাবি না ছেড়ে দিলে তাকে ও তার স্বামী সহ সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে দ্রুত ঘটনা স্থল থেকে সটকে পড়ে। পড়ে আহত গোলাপীকে উদ্ধার করে সিএনজি যোগে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে তাকে ২ দিন আগে রিলিজ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এব্যাপারে পেস্তা মিয়া বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো রাতের আধারে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বত্তরা। সন্ত্রাসীরা এসময় ধারালো অস্ত্র দ্বারা পেস্তার টিনের বাড়ি কুপিয়ে তছনছ করে দেয়। পরে গ্রামবাসীরা বাহিরে এলে সন্ত্রাসীরা মোটর সাইকেলে উঠে ও দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন পেস্তার স্কুলে পড়া ভাতিজা জরূরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহযোগীতা কামনা করে। এরকিছুক্ষন পরেই সদর থানার এসআই গোলাম মোস্তফা সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সন্দেহভাজন হিসাবে ৩ জন কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান থানায় এসে স্থানীয়ভাবে সমস্যাটি সমাধানের আশ্বাস দিলে পুলিশ আটককৃতদের ছেড়ে দেন। এব্যাপারে এসআই গোলাম মোস্তফা জানান, “৯৯৯ এ জানানোর পরপরই আমরা ঘঁনাস্থলে পৌছে সন্দেহভাজন হিসাবে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসি পরে ইউপি চেয়ারম্যানের আশ্বাসে আমরা তাদের ছেড়ে দেই”। এব্যাপারে রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করেন এবং যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। এঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply