মুহাম্মদ সাঈদুল ইসলাম
বাঁশখালী প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ সাধনপুর ৯ নং ওয়ার্ডে জায়গা-জমির বিরোধের জের ধরে ছুরিকাঘাতে ১ ব্যক্তি খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
১২ মে ২০২০ (মঙ্গলবার) সকাল আনুমানিক ৮ টার দিকে সাধনপুর ৯ নং ওয়ার্ড়ের আশরাফ আলী বাড়ীর মৃত আলী মিয়ার ছেলে জহির ড্রাইভার (৩৫) কে জায়গা-জমির বিরোধের জের ধরে দূর্বৃত্তরা ছুরি দিয়ে আঘাত করে। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে তার নিজ আঙ্গিনায় ফেলে রেখে চলে যায়। দূর্বৃত্তদের পরিচয় ওরা একই এলাকার ফজল আহমদ এর ছেলে ইলিয়াস, আনিস, কলিম উল্লাহর ছেলে মনির ও নেজাম উদ্দিন প্রকাশ আবুল ও আলী আহমেদের ছেলে আবদুল হক সহ অজ্ঞাত আরো সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন।
এলাকার লোকজন জহির ড্রাইভারকে ঘটনাস্থল থেকে মূমর্ষ অবস্থায় সিএনজি করে গুনাহগারী মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মেডিকেলের ধীরগতি মনে হলে এম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে রওনা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে ফের গুনাগারি বাসাইন্নার দোকানের দক্ষিণ পাশে সন্ত্রাসীদের বাড়ীর সামনে প্রধান সড়কে গতিরোধ করে এ্যম্বুলেন্স থামিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা। দা-চুরি দিয়ে হামলে পড়ে। পাষন্ডদের বর্বর মারধরে শেষ রক্ষা হলোনা মুমূর্ষু ড্রাইভার জহিরের। ড্রাইভার জহিরের মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত হলে পালিয়ে যায় ইলিয়াস ও আবুল বাহিনীর সঙ্গপাঙ্গরা। ড্রাইভার জহিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করেন। পোস্টমডাম শেষে বাড়ীতে নিয়ে এসেছে সুত্রে জানা যায়।
ড্রাইভার জহিরকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য সাথে থাকা আরো ৩/৪ জন কে হাতে-পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বেধড়ক আঘাত করা হয় বলে জানা যায়। আহত রবিউল আওয়াল হিরু,জামাল ও সাজ্জাদ এরা সকলেই বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে বলেও জানা যায়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী জহির ড্রাইভারের স্ত্রী নুর আয়েশা বেগমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করিলে জানায় অভিযুক্তরা গতকাল সোমবার রাত ৮ টায় আমাদের বাড়ীতে জায়গা-জমির জের ধরে হামলা করে। এ বিষয়ে থানায় এজাহার দিলে আমার স্বামীকে হাটাৎ করে সকালে কয়েকজন লোক এসে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। চুরি দিয়ে আঘাত করার সাথে সাথে তিনি মাটিতে লুটে পডে যায়। আমার স্বামীর পেট থেকে (জোলা) নাড়ি-ভূড়ি বের হয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় আমরা আমার স্বামীকে গুনাহগারী হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য এম্বুলেন্স নিয়ে রওনা হই। আবারও সন্ত্রাসীরা রাস্তায় ওঁত পেতে থেকে রাস্তা গতিরোধ করে এ্যম্বোলেন্স থামিয়ে দেয়। আমার স্বামী সহ সবাইকে বেধম মারধর করে। আমার স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত হলে খুনিরা পালিয়ে যায়।পরে আমার স্বামী ও আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার সাথে সাথে আমার স্বামীকে মৃত ঘোষণা করে মর্গে নিয়ে যায়। আমার স্বামীকে বাড়ীতে নিয়ে আনছি। থানায় এজাহার দেওয়া আছে। মামলা হওয়ার পর জানাজা ও দাফন হবে। আমি আমার স্বামী হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে জায়গা-জমির বিরোধ ছিল। তাদের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাধ লেগেই থাকতো। জায়গা- জমির বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ড্রাইভার জহির খুন হয়।
এদিকে অভিযুক্ত ইলিয়াস ও আবুল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করিতে চাইলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদার মুঠোফোনে জানায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ড্রাইভার জহিরকে চাকো দিয়ে আঘাত করে এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মারা যায়। আমরা এই বিষয়ে দোষীদের আইনগত ব্যবস্তা গ্রহন করা হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply