হাসান মাহমুদ মিলু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) থেকে : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ধুলপুকুরিয়ায় নতুন করে আরও ৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ উপজেলায় আক্রান্ত মোট ১৭ জনের মধ্যে ১৩ জনই ধুলপুকুরিয়া গ্রামের। এ নিয়ে ফরিদপুর জেলায় সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বোয়ালমারীতে। ওই গ্রামের প্রায় ৪০টি বাড়ি প্রশাসন লকডাউন করলেও তা মানছেন না আক্রান্তদের অনেকেই। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
জানা যায়, ঢাকা থেকে আগত এক নারী আত্মীয়ের মাধ্যমে ওই গ্রামটিতে করোনাভাইরাস ছড়ায়। এর আগে গত ১০ মে আগত ওই নারীর পরিবারের ৫ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়। এদের সংস্পর্শে এসে নতুন করে আরও ৭ জন আক্রান্ত হলো। আক্রান্তরা হলেন প্রথম আক্রান্ত পরিবারের পাশ্ববর্তী বাড়ির উলুকান্ত (৬২), সুকুমার রায় (৪৪), তাপস রায় (৫৫), তন্ময় রায় (২৫), বিজন রায় (২০), আরতি রায় (৬০) ও ইতি রায় (২৬)। তবে তাদের সবার শারিরীক অবস্থা ভালো থাকায় নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে ঢাকার বি.আর.বি হাসপাতালে লিভারসিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ধুলপুকুরিয়া গ্রামের শ্রীবাস রায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ সময় তার স্ত্রী শিখা রায় তার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। ওইদিনই শ্রীবাস রায়ের মৃতদেহ ধুলপুকুরিয়ায় এনে সৎকার করা হয়। দুই দিন পর শিখা রায়ের করোনা উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষায় পজেটিভ ধরা পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন প্রায় ৪০টি বাড়ি লকডাউন করলেও তা মানেনি অনেকেই অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, শ্রীবাস রায় মারা যাওয়ার পর বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মৃতদেহটি এলাকায় পাঠিয়ে সৎকার করায়। তাদের ধারণা শ্রীবাস করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সেখান থেকেই এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ডা. দিলীপ রায় জানান, শ্রীবাস রায় লিভারসিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ভারত ও বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়েছে এবং এতেই তিনি মারা যায়। তার মৃত্যুর পর হাসপাতালের ব্যয় মিটাতে না পারায় আমার কাছে তার পরিবার সাহায্য চাইলে আমি তাদের আর্থিক সহায়তা করি। এছাড়া তার করোনা উপসর্গ ছিল কিনা আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ জানান, লকডাউনকৃত বাড়ি প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। যেহেতু সংক্রমণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে সেহেতু স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সাথে আলোচনা করে গ্রামটি লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply