রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে মো. নুরুল হক (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল হক ওই গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলো, একই ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মৃত চেরাগ আলীর ছেলে বাদল (৫৫), বাদলের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (২০), মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে বিল্লাল মিয়া (৩৫), তোয়াব আলীর ছেলে সোহান (২০), হাসিম মিয়ার ছেলে কবির (৪০)।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আধিত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন স্বপন ও মো. কাঞ্চন মিয়ার মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে বুধবার সকালে দুই পক্ষের লোকজন টেঁটা, বল্লম, দা, ছুরি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ স্বপনের লোকজনের টেঁটায় কাঞ্চলেনর ভগ্নিপতি নুরুল হক টেঁটাবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্বপন গ্রুপের চারজন ও কাঞ্চন গ্রুপের একজন আহত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৪টি বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অপরদিকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নুরুল হকের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাঞ্চনের লোকজন পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে এলাকায় নতুন করে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান নুরুল হক। আহত কোন রোগী এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি।
নিহত নুরুল হকের ছোট মেয়ে ইতি আক্তার বলেন, আমার বাবা ঝগড়ার সাথে জড়িত ছিলেন না। স্বপনের লোকজন মামা বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাত ও অগ্নিসংযোগ চালাচ্ছে এমন সংবাদ শুনেই বাবা সেখানে যান। ওই খানে যাওয়ার পর বাবা টেঁটাবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
এ ব্যাপারে চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নাসির উদ্দিন বলেন, ফরহাদ হোসেন স্বপন ও মো. কাঞ্চন মিয়ার মধ্যে অনেক দিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। তারা দুজই আওয়ামী লীগ সমর্থিত। স্বপন ও কাঞ্চন একই বংশের লোক।
এই ঘটনায় নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (রায়পুরা-সার্কেল) তারিক রহমান, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মূলত দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নুরুল হক নামে এক ব্যক্তি টেঁটাবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে।
Leave a Reply