শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

রাঙ্গামাটিতে দীর্ঘ ১৪ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় হতাশ শিক্ষক-কর্মচারী

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ জুন, ২০২০
  • ৩১২ ভিউ টাইম

॥পলাশ চাকমা, রাঙ্গামাটি ॥

দুগম পাহাড়ে স্বপś এখন অধুরা রয়েই গেছে।স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অর্থ দিয়ে চলে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয় আনেক স্বপś,আশা-ভরসা নিয়ে এ বিদ্যালয়ের যাত্রা।দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পরও এমপিওভুক্ত থেকে বঞ্চিত রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় আইমাছড়া ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী ঠেগা ১৭৪ নং রামুক্যছড়ি মৌজার কুদুছড়া কমিউনিটি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিগত সময়ে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিও নিবন্ধন দিলেও তাতে এ বিদ্যালয়ের নাম এমপিও নিবন্ধিত করার সুযোগ হয়নি । ফলে মানবেতর জীবন যাপনের পথ দীর্ঘ হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের। আর সেই সাথে চরম হতাশ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে এডিবি,জিওবি ও সিডিসি,হিলেহিলি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অর্থায়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অনেক স্বপś,আশা-ভরসা নিয়ে এ বিদ্যালয়ের যাত্রা। কিন্তুু ্ওই প্রকল্পের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলেও ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গ্রামবাসীর চাঁদার অর্থে চলে বিদ্যালয়টি। পরবর্তী বছরে ১লা জানুয়ারী ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল মার্চ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে চলে বিদ্যালয়টি। এরপর মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন প্রকল্পটি বন্ধ হলে আবার এক বছর গ্রামবাসীর চাঁদার টাকায় চলে বিদ্যালয়টি। এর পরবর্তী বছরে আবার ১লা জানুয়ারী ২০১৯ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুবর্ণ ভূমি ফাউন্ডেশন বিদ্যালয়টির দায়িত্ব হাতে নেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা, শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, মিড ডে মিল ও স্বাস্থসেবা সহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে সুবর্ণভূমি ফাউন্ডেশন। এভাবে ভঙ্গুর পরিবেশে চলছে বিদ্যালয়টি।
জানা যায়,প্রাক-প্রাথমিক হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সর্বমোট ৬৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ফলাফলও ভালো। এ বিদ্যালয় হতে অধ্যয়ন করে বর্তমানে অনেক ছাত্র ছাত্রী উচ্চ শিক্ষায় পড়াশোনা করছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ২ জন। কর্মচারী রয়েছে ১ জন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জ্ঞানময় চাকমা জানান, অত্যন্ত কষ্ট লাগে। আশায় আশায় এত বছর শিক্ষকতা করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রাপ্তির ফলাফল শূণ্য কোটায় দাড়িয়েছে। এ বিদ্যালয়ের অসহায় দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের মুখ দেখে কষ্ট সহ্য করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এতবড় একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনে হয় যেন অযথা অবহেলা ও ˆবষম্য দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিদ্যালয় পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়। এখানকার অধিকাংশ মানুষ জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। উৎপাদিত পণ্যগুলোও দূর্গম হওয়ায় ঠিকমত বেচাকেনা করতে পারে না। যারফলে অভিভাবকদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা খরচ চালানো কষ্টকর হয়। এমন সময় মানবিকতার খাতিরে বিনা বেতনে পড়াতে হয়।
তিনি আরো বলেন, এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ১৪ বছরেও সরকারের সুনজরে পড়েনি। কেনই বা পড়বে? দুর্গম এলাকার পচ্ছাৎপদ মানুষের দুঃখের খবর কে লিখে বা কে শুনে? বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার শুরুতে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গ্রামবাসীর চাঁদার অর্থে চলে। পরবর্তী বছরে ১লা জানুয়ারি ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে চলে বিদ্যালয়টি। এরপর প্রকল্পটি বন্ধ হলে আবার ১ বছর গ্রামবাসীর চাঁদার টাকায় চলে বিদ্যালয়। এর পরবর্তী বছর আবার ১লা জানুয়ারী ২০১৯ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুবর্ণ ভূমি ফাউন্ডেশন বিদ্যালয়টির দায়িত্ব হাতে নেন। বর্তমানে সুবর্ণ ভূমি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় চলমান রয়েছে বিদ্যালয়টি। এভাবে ভাঙ্গাগড়ার মধ্যে দিয়ে চলে বিদ্যালয়।
চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সত্যবান চাকমা ও ছাত্রী ক্ষেমা চাকমা বলেন, স্যাররা তাদের আন্তরিকতার সাথে লেখাপাড়া শেখায়। তাদের খুব ভালে লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাদের বিদ্যালয় সরকারী না হওয়ায় এবং সরকারী সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার কারণে স্যারদের শিক্ষা কার্যক্রম যথাযথ পরিচালনা করতে অসম্ভব হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রিয় রঞ্জন চাকমা জানান, এমপিওভুক্তের আশায় শুরু থেকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এমনকি অনেক স্বপśও দেখেছি। কিন্তু দূর্ভাগ্য দীর্ঘ ১৪ বছরেও এমপিও ভুক্তি হয়নি। আর তাদের কষ্টের কথা , ছাত্র-ছাত্রীদের দুঃখ কষ্টের কেউ শুনবার বা লেখার কেউ নেই । যারফলে অনেক কষ্ট সহ্য করে চালাতে হচ্ছে বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নোনা দেওয়ান জানান, বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় তারা খুবই হতাশাগ্রস্থ। এখন কি কররো বুঝে উঠতে পারছি না। সব কিছু মিলিয়ে ঝিমিয়ে পড়ার অবস্থা। এ থেকে উত্তরনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় হল দূর্গম পাহাড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়া থেকে কবে মু্িক্ত পাবে।
সুবর্ণ ভূমি ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি সোহাগ চাকমা জানান, ১লা জানুয়ারী ২০১৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা,ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল ড্রেস, মিড ডে মিল, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা,বিদ্যালয় মেরামত,স্যানিটারি লেট্রিন নির্মাণ ও বিদ্যালয়ে ম্যাটেরিয়াল যাবতীয় কাজ সহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুবর্ণ ভূমি ফাউন্ডেশন। আর বিদ্যালয়টির কার্যক্রম ফলপ্রসু হলে এমপিওভুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়টির সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাবেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান।
এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল জানান, ছয় পাড়াকে কেন্দ্র করে তাদের বিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছে। জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫শ অধিক। এখানকার এলাকাগুলো যেমনি দূর্গম ও পচ্ছাৎপদ তেমনি সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। বিদ্যালয়টি যদি এমপিও ভুক্তি করা না গেলে অদুর ভবিষ্যতে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট সদয় বিবেচনা স্বরুপ জোড়ালোভাবে দাবি জানাচ্ছি। আর বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করে দুর্গম পাহাড়ে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888