(বগুড়া) প্রতিনিধি: দেশজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসে লকডাউনের মধ্যে ঘরে ঘরে ভুতুরে বিলের কাগজ ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী’র দপ্তর নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো) উপজেলায়। যা ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকের ৫-৭ গুণ বেশি বিল এসেছে। ৩০০ টাকার বিদ্যুৎ বিল হয়েছে ৮০০থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। আর ৮০০ টাকার বিল হয়েছে ১৫০০ এর অধিক টাকা পর্যন্ত। গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার না দেখে বিল করলেও পূর্বের রেকর্ড দেখে বিল করলে এতোটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতো না। এর নেপথ্যেও কারসাজি আছে। কোনো কোনো এলাকায় অতিরিক্ত বিল কাটছাঁট করার জন্য মিটার রিডাররা উপরি দাবি করছে। ভূতুড়ে বিল নিয়ে গ্রাহকদের ক্ষোভ এতোটাই বেড়েছে যে, গ্রাহকরা এ নিয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও একটি সূত্রে জানা যায়।
মহাস্থান দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের পুত্র রেজাউল করিম জানান, ২৪/৯/২০ইং আজ আমার বিদ্যুতের লাস্ট ডেট ছিল। বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল আসা দেখে বিলের কাগজ মিটার রিডিংয়ের সাথে মিলিয়ে দেখি ২৫০০ ইউনিট আমার জমা। সেখানে এমন ভূতুড়ে বিল পেয়ে আমি হতাশ।
পরে মহাস্থান আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী’র দপ্তর নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো) এর অফিসে গেলে তারা বলেন, বিল যা এসেছে দিয়ে দিন, পরে মাস থেকে সমন্বয় করা হবে। একই অভিযোগ মহাস্থান দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আবু তালেবের পুত্র খোকার। তার মিটারে ৩৭০০ রিডিং শো করলেও বিলের কাগজে ৪৪০০ ইউনিট দেখিয়ে বিল করা হয়েছে।
একই ভাবে অভিযোগ করেন, মহাস্থান বারিদার পাড়া গ্রামের আব্দুল খালের পুত্র মাহিদুল ইসলাম তিনি বলেন,
মিটার রিডিংয়ে এত বেশী ইউনিট উঠানো হয়েছে যা বলা দুস্তর। মিটারের হিসাব মোতে ১৫০ ইউনিট সে পাবে অতচ বিদ্যুৎ বিল কষা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের নিজের মোত করে। ভূতুরে বিদ্যুৎ বিলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় আরও জানান, মহাস্থানের শাহ-জালাল, ফটু খাঁন, শুকুর আলী সহ আরও অনেকেই। একই অভিযোগ মিললো
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা মেহেরুন হক ও রফিকুল ইসলাম নামের ব্যক্তিদের কাছে। তারা জানান, আমাদের বিল প্রায় ডাবল এসেছে।
করোনা কালে এসব গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুতের ভূতুরে বিল এত বাড়তি যা পরিশোধ করতে দিনমজুর দরিদ্র পরিবাররা হিমশিম খেতে হচ্ছে। মহামারি করোনা মোকাবেলায় প্রায় ৩মাস ঘরবন্ধী মানুষ। নেই কোন আয়ের উৎস। এরই মধ্যে ধরিয়ে দিচ্ছে ভূতুরে বিদ্যুৎ বিল। যেগুলো পরিশোধ করতে অনেক গ্রাহকেরা অসম্ভব বলে দাবি করছেন।
এদিকে, ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আরও অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতিক দূর্যোগ ছাড়াই প্রতিদিন বিদ্যুদের গোলমাল শুরু হয়। অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা থাকে লোডশেডিং। গত বৃহস্পতিবার কোন ঝড়বৃষ্টি নেই, অতচ সারারাত বিদ্যুৎবীহিন এলাকা ছিল। বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে অনেকের পরিবারের ছোট শিশু, অসুস্থ্য ব্যক্তি ও বয়োজ্যেষ্ঠদের গরমে হাঁপিয়ে উঠতে হয়।
এদিকে মহাস্থানে (নেসকো) এর দায়িত্বহীনতার কারণে পরিত্যক্ত তাঁড়ে জড়িয়ে বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে সম্প্রীতিক ২জনের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এরপর মহাস্থান প্রতাববাজু গ্রামে বিদ্যুতের ঝুঁকিপূর্ণ খুটি অপসরণ মেরামত করতে মহাস্থান (নেসকো) অফিস ঘেরাও করে ওই গ্রামের নারী-পুরুষ।
এখানে দালালদের দৌরাত্ম্য কম নয়। (নেসকো) এর কোন নিয়োগ ছাড়াই এখানে বেশকিছু দালাল চক্র রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলাতে বিদ্যুতের বিল নিয়ে প্রায় ঘরে ঘরেই সমস্যা। কারো বাড়িতে সঠিক বিল আসেনি। গ্রাহকদের অভিযোগ বিদ্যুৎ বিভাগ ইচ্ছে করেই এই খামখেয়ালি করেছে।
বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহক অসন্তোষ দ্রুত
নিষ্পত্তি করার দাবি জানান গ্রাহকরা।
বৃহস্পতিবার, (২৪সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে ঘুরে একাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলেন, ভূতুরে বিল সময় মত পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে সব মিলিয়ে তারা মহা বিপদে রয়েছেন।
আবাসিক সহকারী প্রকৌশলী’র দপ্তর নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের শিবগঞ্জ বগুড়া জোন, আর-ই, বজলু রশিদের সাথে ভুতুরে বিদ্যুৎ বিলে গ্রাহকের অসন্তোষের কথা জনতে চাইলে তিনি বলেন, যা হয়েছে এটি দুঃখজনক, তবে সামনে মাস থেকে সবার বিল মিটার দেখে সমন্বয় করা হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply