মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় তিন দিনের বৃষ্টিতে উপজেলা ও পৌরশহরের বেশ কয়েকটি পাড়ার প্রায় দেড়শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ার খবর জানা গেছে। রানীশংকৈল উপজেলায় এসব লোকজনের বাড়িঘর বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হওয়ায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন পৌর শহরের রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও দি সান রাইজ কিন্ডারগার্টেন সহ আত্মীয়দের বাসায়। স্কুল কলেজে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো খাদ্য সংকটে রয়েছে বলে জানা গেছে।
২৬ জুন শুক্রবার রাতে সাবেক এমপি সেলিনা জাহান লিটা’র তত্ত্বাবধায়নে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া মানুষের মাঝে রাতের খাবার দিয়েছেন বলে জানা গেছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর মধ্যে পৌরশহরে কুলাক নদীপাড় ঘেষা ‘শশ্মান পাড়া’, রানীশংকৈল উপজেলার আমজুয়ানের নদীপাড় সহ রাজবাড়ীর একাংশ এলাকার বাসিন্দা। ২৭ জুন শনিবার সকালে সরেজমিনে, পৌরশহরের প্লাবিত এলাকা কুলিক নদীর পার্শ্ববর্তী ভাটাপুড়া ও শশ্মান পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ঘরবাড়ি ও গাছ পালা পানিতে ডুবে গাছের পাতা ও ঘরের চালা দেখা গেছে। এ সময় কুলাক নদী সংলগ্ন বস্তিতে রানীশংকৈল উপজেলা চেয়ারম্যান ও রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি আফরিদা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে পরিদর্শন করতে দেখা যায়। কুলিক নদীর ব্রিজসংলগ্ন মূল ফটকের সামনে পানিতে পাগলু গ্যারেজটি বন্যার পানিতে হাবুডুবু খেতে দেখা যায়। গ্যারেজ মালিক জানান, গ্যারেজ ডুবে রাস্তায় পাগলু মেরামত করছি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও এলাকা প্লাবিত হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষকে খাদ্যাভাবে ব্যাপক সমস্যায় পেতে হবে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। শুধু বাড়িঘর নয়, ফসলেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদী সংলগ্ন এলাকায়। এমনকি তলিয়ে গেছে মৌমুমী ফসলও। উত্তরের প্রায় জেলা বন্যা কবলিত হওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় সামান্য পানিতে কুলিক নদী ভরাট হয়ে এই সমস্ত বাড়িঘর প্রতিবছর প্লাবিত হয়। আর তাদের আশ্রয় নিতে হয় স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঘরে। এদিকে করোনা মহামারিরর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বানভাসি মানুষের আশ্রয় নিতে কিছুটা সুবিধা হলেও প্রধান সমস্যা খাবারের। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কুলিক নদীর দুপাশে স্থানীয় ভূমিদস্যুদের জায়গা দখলের মত বিষয়ট মূল কারণ। সে কারণে নদী অবৈধ দখলমুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে প্রশাসনকে। নদীটি দ্রুত খনন করা হলে এ সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পারে নদিবস্তি এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ বলেও তারা অভিযোগ করেন। ভূক্তভোগীরা বলেন, আমরা আশ্রয় নিয়ে হয়ত বাঁচতে পারবো ঠিকই কিন্তু আমাদের ফসল তো পানিবন্দি। পানি না কমলে খাবো কি? এ বিষয়ে রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদা জানান, বানভাসি লোকজনকে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। রানীশংকৈল উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, আমরা বানভাসি পরিবারগুলোকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য পরিদর্শন করলাম। তাদেরকে সহযোগিতা অবশ্যই করা হবে। বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া পরিবারের খোঁজ সার্বক্ষণিক রাখছি।
এই ক্যাটাগরী আরো খবর...
Leave a Reply