মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার শুরু হয়েছে ‘ভাদর কাটানি’ উৎসব। মহামারী করোনাভাইরাস ও বন্যা হওয়া সত্যেও মানুষ এখনো ভুলেনি ভাদর কাটানি মহা উৎসব। পহেলা ভাদ্র ১৫ আগস্ট শনিবার । ঠাকুরগাঁও জেলা সহ উত্তরাঞ্চলে শুরু হওয়া ঐতিহ্যবাহী উৎসব ভাদর কাটানিতে বাবার বাড়ি নাইওর যাওয়া শুরু করেছে নববধূরা। শহরে এর প্রভাব কম থাকলেও গ্রামে এ উৎসবটি অধিক প্রচলিত।এ উৎসবের রীতি অনুযায়ী, ভাদ্র মাসের প্রথম দিন থেকে কমপক্ষে ১০ দিন পর্যন্ত স্বামীর মঙ্গল কামনায় কোনো নববধূ তার স্বামীর মুখ দর্শন করবেন না। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ‘ভাদর কাটানির’ কোনো ব্যাখ্যা না থাকলেও এ অঞ্চলের আদি প্রথা অনুযায়ী যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে এ উৎসব। জানা যায়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় সহ বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চলে এবং ভারতের পশ্চিম ও দক্ষিণ দিনাজপুর মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের কোনো কোনো অংশে এই প্রথা চালু আছে। এছাড়াও জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি জেলার অনেক এলাকার বাঙ্গালি সমাজেও এই প্রথা চালু রয়েছে। আধুনিক যুগে ভাদর কাটানির পক্ষে নিরপেক্ষ কোনো যুক্তিতর্ক নেই। তবুও ভাদর কাটানি উৎসব থেমে নেই। স্থানীয় লোকজনের বিশ্বাস, বিবাহিত জীবনের প্রথম ভাদ্র মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত স্বামীর মুখ দেখলে অমঙ্গল হবে। তাছাড়া সাধারণত এ মাসে বিয়ের কোনো আয়োজনও চোখে পড়ে না।
প্রচলিত এ প্রথাটি যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলে হিন্দুু-মুসলিমদের মধ্যে পালিত হয়ে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী, কনে পক্ষ শ্রাবণ মাসের দু-একদিন বাকি থাকতেই কনেকে বাবার বাড়ি নিয়ে আসতে বরপক্ষের বাড়িতে বিভিন্ন রকমের ফল, মিষ্টি, পায়েসসহ নানা রকম পিঠা-পুলি নিয়ে যায়। বরপক্ষও সাধ্যমতো তাদের আপ্যায়ন করে। ঠাকুরগাঁও জেলার প্রবীণ সাংবাদিক শাহিন ফেরদৌস জানান, ভাদর কাটানি মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় বিষয় না হলেও এ অঞ্চলে প্রথাটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এক সময় সম্ভ্রান্ত হিন্দু সম্প্রদায় এ উৎসবকে জাঁকজমকভাবে পালন করত। তাদের এ রেওয়াজ ক্রমান্বয়ে এ অঞ্চলের মানুুষকে প্রভাবিত করে। একপর্যায়ে উৎসবটি এ অঞ্চলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে দাঁড়ায়।
এই ক্যাটাগরী আরো খবর...
Leave a Reply