হাসান মাহমুদ মিলু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের বেড়িরহাটে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মিজানুর রহমান ও তার নির্বাচনী প্রতিদ্ব›দ্বী খালেদ মোশাররফ রঞ্জুর মধ্যে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে বিরোধ চলে আসছে। সামান্য কথাকাটাকাটির জের ধরে গত ২৯ অক্টোবর সকালে চেয়ারম্যানের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেড়িরহাটে অবস্থান নেয়। এসময় উভয় গ্রæপর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা আঁচ করতে পেরে নিজ সমর্থকদের শান্ত থাকতে বলে পুলিশের সহযোগিতায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আলফাডাঙ্গা থানায় যান মোশাররফ হোসেন রঞ্জু। থানায় উপস্থিত থাকতেই খবর পান তার সমর্থকদের উপর হামলার ও তার ভাই পাট ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বেড়িরহাট বাজারে তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার সময় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সরদার এর প্রায় অর্ধশতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় মো. মিজান সর্দারের সন্ত্রাসী বাহিনী রফিকুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করতে থাকে। ভাঙচুর করার সুযোগে ওই ব্যবসায়ী নিজের জীবন রক্ষায় দৌঁড়ে পালানোর সময় তার শোরচিৎকারে নিজদলীয় লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় রঞ্জুর সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে মিজান সর্দারের সমর্থক সাবেক ইউপি সদস্য গোলজার রহমানের বসত বাড়ির দোতলা ভবনে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে, এতে তার বাড়ির তিনটি জানালার কাঁচের ভেঙ্গে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার ৩ দিন পর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সমর্থক পশ্চিম চরনারনদিয়া গ্রামের মোমরেজ মোল্যার ছেলে মো. অহিদুজ্জামান বাদী হয়ে খালেদ মোশাররফ রঞ্জুকে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের নামে একটি চাঁদা দাবি, ইমারত নির্মাণকাজে বাঁধা ও ভাঙচুরের মামলা করেন। বেড়ির হাট বাজারের ব্যবসায়ী আক্কাচ শেখ জানান, ঘটনার সময় রঞ্জু থানায় ছিল, কেবল মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সাজানো নাটক করে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী সরদার মতিয়ার রহমান জানান, উভয় পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় আমি মুরব্বি হিসাবে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করি। এর মধ্য উত্তেজিত কয়েকজন গোলজার মেম্বারের জানালায় ঢিল মারে এতে তার দোতালার তিনটি জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। তবে রঞ্জু ওই সময় এলাকায় ছিল না। আতিয়ার রহমান শেখ জানান- রাজনৈতিক ভাবে হেনস্থা করতেই বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান -রঞ্জুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তার লোক দিয়ে চাঁদাবাজির মামলা করিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে পাচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান জানান, জালাল চেয়ারম্যানের কিছু লোক আমার দলে যোগ দেওয়ায় রঞ্জু ক্ষিপ্ত হয়ে আমার লোক গোলজারের বাড়িতে হামলা চালায়। তবে চাঁদা দাবির বিষয়ে তিনি জানান এসপি সার্কেল সরেজমিনে তদন্ত করে সততা পেয়েই মামলাটি নিয়েছে। মোশাররফ হোসেন রঞ্জু জানান, আমাকে রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতেই আমার প্রতিপক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিপক্ষ যে সময় মামলায় উল্লেখ করেছে সে সময় আমি কোথায় ছিলাম তা আদালতেই প্রমাণ করবো। থানার সিসি ক্যামেরাই সব প্রমাণ করবে। আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম জানান, মোশাররফ হোসেন রঞ্জু দাবি করতেই পারেন তিনি থানায় ছিলেন, মামলা হয়েছে তদন্তে সত্য মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply