সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমানের স্মৃতিতে দুপচাঁচিয়ায় আমশট্ট শোলারপুকুর যুদ্ধ ও শহিদ নিজাম

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৪৬৮ ভিউ টাইম

দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি:বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যভাগে হানাদার পাকিস্তানিদের পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। বিজয়ের মাসের অতলে লুকিয়ে আছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনবাজি রাখার ইতিহাস। ১৯৭১ সালের সেইদিনগুলির করুন কাহিনী আজও তাদের হৃদয়ে নাড়া দেয়। তেমনি এক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বগুড়ার দুপাচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের বড় নিলাহালী গ্রামের মৃত মজিবর রহমান প্রামানিকের ছেলে আতাউর রহমান।

তিনি সহযোদ্ধা গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত হানিফ আলির ছেলে নিজাম উদ্দিনের যুদ্ধে শহিদ হওয়ার কাহিনী স্মরন করে কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন তাকে অনুপ্রানিত করে। মনে মনে যুদ্ধে যাবার বাসনা প্রবল হতে থাকে। গোপনে যোগাযোগ করতে থাকেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আপন খালাতো ভাই ছোট নিলাহালী গ্রামের আফজাল হোসেনের সাথে । খালাতো ভাইয়ের কথামত কোন পিছুটান অনুভব না করে একরাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে জয়পুরহাট জেলার মুনজিয়া গ্রামে অবস্থান নেন। সেখান থেকে পরেরদিন সন্ধ্যায় দলবদ্ধভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহনের জন্য ভারতে পৌঁছে যান। প্রশিক্ষণ গ্রহনশেষে যুদ্ধের মাঠে ঝেঁপে পড়েন।মাঝে মাঝে ছোটখাটো অপারেশনে অংশ নেন। এরই মাঝে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা গোপনে অবস্থান নেন উপজেলার কামারু গ্রামে । সেখানে থেকে গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে পর্যবেক্ষন করতে থাকেন রাজাকারদের অবস্থান। হঠাৎ খবর আসে, চৌমুহনী ব্রিজের আশেপাশে রাজাকাররা অবস্থান নিয়েছে। কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক তাকেসহ আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিনকে ১৯৭১ সালের ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার দিনে গোপনে রাজাকারের অবস্থান শনাক্তের জন্য পাঠান।সেখানে তারা দুজন রাজাকারের অবস্থান খুঁজে না পেয়ে হেঁটে আমশট্ট শোলারপুকুরের নিকট পৌঁছলে অতর্কিত রাজাকারের আক্রমনের শিকার হন। রাজাকার সিদ্দিক তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার সাথে সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম হ্যান্ড গ্রেনেড ছোড়েন। গ্রেনেডের ছড়া চারেদিকে বিদর্ন হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ নিজাম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সঙ্গীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে কিছুদুর পালিয়ে যাবার পর ধানের জমির মধ্য নিজেকে লুকিয়ে ফেলেন। রাজাকারেরা অনেক খোজাঁখুজিঁর পর তাকে না পেয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এরপর তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে গোপনে চিকিৎসা নিতে থাকেন এবং বারবার অবস্থান পরিবর্তন করেন। এর’ই মাঝে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ঘোষনা করা হয়। সেদিন উঠে দাঁড়ানোর শক্তি না থাকলেও
বিছনায় শুয়ে তিনি সেই বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করেন। কিন্তু আনন্দের সাথেসাথে সহযোদ্ধা শহিদ নিজামের কথা মনে করে সেদিন চোখ গড়িয়ে জল ফেলেছেন। এখনও তিনি সহযোদ্ধা শহিদ নিজামের কথা স্মরন করে নিরবে নিভৃতে চোখের জল ফেলেন।
মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান আরও জানান, বিজয়ের পরে আরও ২ বছর তিনি ছিলেন শারিরীকভাবে অক্ষম। কোন রকমে উঠে দাঁড়াতে পারতেন। এরপর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠেন। বর্তমান কোন জমিজমা না থাকলেও ভাতার টাকায় ভালভাবে সংসার চলছে।
প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন চাওয়া পাওয়ার হিসাবে যুদ্ধে যাননি। সুখি সমৃদ্ধবাংলাদেশ গড়ে ওঠুক এটাই তিনি আশা করেন।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন শহীদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান যুদ্ধাহত হওয়ার ঘটনাস্থল দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আমশট্ট শোলারপুকুরে নির্মিত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888