সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

মাদকের চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে ক্রিকেট জুয়া !

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩৮৪ ভিউ টাইম

 আতাউর রহমান বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ

ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষনীয় খেলা আইপিএল, বিশ্ব কাপ ও বিপিএল আমেজ থাকে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় পিরব ইউনিয়ন জানগ্রাম, খয়রা পুকুর ও পালিকান্দা মন্ডলপাড়া সবসময়ই। এ আমেজ নিয়ে জমজমাট জুয়ার আসর চলছে সারাদেশে। যার প্রভাব থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা ছোট বড় সবাই। এই খেলাকে কেন্দ্র করে পীরব,খয়রাপুকুর, জানগ্রাম ও পালিকান্দা মন্ডলপাড়া এলাকায় প্রতিদিন বসছে জমজমাট জুয়ার আসর। বেপরোয়া ভাবে জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর জুয়াড়িরা। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয়ে যায় খেলা নিয়ে হৈ-হুল্লোড়, হট্টগোল এসবের পাশাপাশি বাজি ধরার নামে চলছে জুয়া। আর এ জুয়া ছড়িয়ে যাচ্ছে সেলুন থেকে শুরু করে চায়ের দোকান, কাপড়ের দোকান গ্রাম-গঞ্জের প্রান্তিক জনগণের মাঝে। আর উক্ত জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত মারা-মারি সহ নানান অসমাজিক কর্মকান্ড নিত্যদিনে নিয়মে পরিনত হয়েছে। বাড়ছে চুরি, দোকান পোড়া, রাহাজানির মত ঘটনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর থেকে এ ক্রিকেট জুয়া শুরু হয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ৫০ ওভারের চেয়ে ২০ ওভারের নির্ধারিত ম্যাচই ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সেই সুবাধে আইপিএল ও বিপিএলের প্রতিটি ম্যাচ নিয়ে চলছে বাজি বা জুয়ার জম জমাট আসর। সাধারণ মানুষের এই আনন্দ আর আবেগকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগীরা সামাজিক পর্যায়ে এখন মাদকদ্রব্যের মতো ছড়িয়ে দিচ্ছে ক্রিকেট জুয়া। যেখানে ১শ’ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত বাঁজির পরিমাণ দাড়ায়। যাতে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ। চলমান বিশ্বকাপ ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) কে ঘিরে বাঁজি ধরার ধরণ- ম্যাচের কোন একটি দলের জয়ী হওয়া, বলে চার-ছক্কা বাঁজি, উইকেট বাঁজি, কোন ওভারে কত রান, কত ওভারে উইকেট, শেষ বলে কত রান হবে, টসে কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়ার বেশি রান করবে, কে বেশি উইকেট পাবে ইত্যাদি। চলছে হাজার থেকে লাখ টাকার বাজিমাত। আবার অনেক জুয়াড়ী আছে যারা এক পক্ষের সাথে অপর পক্ষের মোবাইলের মাধ্যমে বাজি ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে। যদিও কার সাথে বাজি ধরা হয়েছে সেটাও জুয়ারীরা জানতে পারেনা। কিন্তু যে জুয়ারী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মধ্যস্থতা করে দেয় সেই টাকা ওই মিডিয়া করা ব্যক্তিই উঠিয়ে এনে দেন। যে টাকা থেকে ওই মিডিয়াকারী ব্যক্তি নির্দিষ্ট শতকরা হারে একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। অনেক সময় হারজিতকে কেন্দ্র করে কলহ-মারামারি হচ্ছে। এসব বন্ধে কি প্রসাশনের কোন ধরনের ভূমিকা রাখছে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। ক্রিকেট খেলা শুরু হওয়ার পরপরই দেশের প্রত্যেকটি চায়ের দোকান,সেলুন,চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত ল্যাবে ক্রিকেট দর্শকদের হুমড়ি খেয়ে পরতে দেখা যায়। এ দৃশ্য দেখে মনে হতে পারে সবাই বুঝি ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে খেলা উপভোগ করছে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবাই এ ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়ায় ব্যস্ত। সরজমিনে দেখা যায়, দোকানে, গলিতে গলিতে নির্বিঘ্নে চলছে এই জুয়া খেলা। আর এই জুয়া খেলার ধরনটি হয় মূলত ওভার, ইনিংস বা ম্যাচভিত্তিক। প্রায় সব বয়সী ছেলে-যুবকেরা এই জুয়ায় অংশ নিচ্ছে। আর এ জুয়ার প্রতি মানুষকে কৌতুলী করে তুলছে প্রতিনিয়ত। যার ফলে ঐ ব্যক্তি ক্রমান্বয়ে জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে যা এক বার আসক্ত হলে নেশায় পরিনত হয়ে সহজে ফিরে আসতে পারেনা। যার পরিনতি পথের ফকিরে পরিনত করেছে অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাজিকর জানান, ‘বর্তমান সময়ে খেলাধুলা মানেই বাজি ধরাধরি। বিপিএল, আইপিএল, ফুটবলসহ প্রায় সব ধরণের খেলায় সে বিভিন্নজনের সাথে বাজি ধরে। কখনও টাকা আসে, কখন চলে যায়। এতে করে সে একটা অন্যরকম আনন্দ পায়।’ এ ক্রিকেট জুয়া মানুষকে ইয়াবার মত আসক্ত করছে। যার ফলে এতে উঠতি বয়সের যুবক থেকে শুরু করে সেলুনের নাপিত,বিভিন্ন শ্রমজীবী, হোটেলের মেসিয়ার, টমটমের ড্রাইভারসহ স্কুল কলেজের ছাত্ররাও জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। এলাকায় চুরি, ডাকাতি ,ছিনতাই, রাহাজানির মত বিভিন্ন ধরনের অসমাজিক কর্মকান্ড দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাদেশে অবলীলায় অংশ নিচ্ছে জুয়াড়িরা। যোগাযোগ হচ্ছে মোবাইল ফোনে, লেনদেন হচ্ছে বিকাশে। তবে পাড়ার অলিগলিতে স্ক্রিন লাগিয়ে ও টিভিতে টাকা হাতবদল হচ্ছে সরাসরিই। প্রতিটি ম্যাচের প্রত্যেক বলে চলছে এসব জুয়া। এখন ক্রিকেট জুয়াকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে কেউ কেউ। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ নানা পেশার মানুষও মেতেছে এসব জুয়া খেলায়। প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি। জুয়ার টাকা দিতে না পারায় ঘটেছে আত্মহত্যার ঘটনাও। টাকার অভাবে কেউ কেউ দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, মায়ের/স্ত্রীর সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধকও রাখছে। এর পরও এসব বিষয়ে নীরব রয়েছে প্রশাসন। আমার মতে, এই জুয়া খেলা বন্ধ করতে হলে পুলিশ প্রশাসনকে নজর বাড়াতে হবে। বিশেষ করে যে সকল স্থানে এ সকল জুয়া চলে সে সব স্থানে সাদা-পোষাকে গোয়েন্দা নজর বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষের লেবাসে তাদের সাথে মিশে এসব জুয়ারীকে চিহিৃত করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা প্রদান করতে পারলে অনেকাংশে এ জুয়া কমতে আসবে। আর মাধ্যম হিসেবে যারা কাজ করে মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে তাদের তথ্য নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করলে এসব কমে আসবে। পুলিশের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন হতে হবে। কারণ এই ক্রাইম বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888