মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়ার শাজাহানপুরে কিশোর নওফেল (১৪) কে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। মঙ্গলবার ২৮শে জুন বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী দুপুর ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলন এর মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২০ জুন নওফেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শাজাহানপুর থানা পুলিশ। এর ২ দিন পূর্বে নিখোঁজের জন্য সাধারণ ডায়েরি করেছিল নিহত নওফেল এর পরিবার।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার বলেন, ১৮ জুন নওফেল এর জন্মদিন ছিলো। ওই দিন তার বাবা ইসরাফিল হোসেন টিক্কা ১৮ হাজার টাকায় একটি স্মার্টফোন কিনে দেন। সেই মোবাইল নিয়ে নওফেল ওই বন্ধুর সাথে বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে একটি জঙ্গলে যায়। মূলত: এ জঙ্গলে এসে তারা ধূমপান করত।
এ সময় অভিযুক্ত কিশোর পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সঙ্গে একটি মাফলার নিয়েছিল। জঙ্গলে গিয়ে ধুমপানের ফাঁকে মাফলার গলায় প্যাচাঁনো গল্প তুলে এই কিশোর। কিন্তু বন্ধু হওয়ার কারণে নওফেল এসবের কারণ বুঝতে পারেনি।
এরই এক পর্যায়ে নওফেলের গলায় মাফলার দিয়ে প্যাঁচ দিয়ে পেছন থেকে টান দেয়। এতে কিছুক্ষণ ছটফট করে নওফেল মারা যায়। পরে পাশে থাকা একটি বাঁশ দিয়ে মাথায় পরপর দু’বার আঘাত করে অভিযুক্ত। মৃত্যু নিশ্চিত হলে সেখান থেকে আরও প্রায় ১৫ হাত দূরে ঝোপের ভিতরে নওফেলের মরদেহ টেনে নিয়ে গিয়ে গুম করে।
পরবর্তীতে মরদেহটি উদ্ধার হলে ওই কিশোর সবার অগোচরে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত কিশোরের মোবাইল হাতানোর উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন কারণে। তার এক বান্ধবীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার কাছে দ্রুত এ টাকা যোগাড় করতে পারেনি অভিযুক্ত ছেলেটি। মোবাইল বিক্রির সূত্র ধরে জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে ওই তরুণীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, নওফেলের মোবাইলটি হাতিয়ে নিয়ে অভিযুক্ত কিশোর জাকিয়া খাতুনের সঙ্গে দেখা করে। পরে তারা দুজনে বগুড়া শহরের সাতমাথায় একটি দোকানে গিয়ে ওই মোবাইল ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিক্রির টাকা নিয়ে তারা দুজনে শহরের গালাপট্টিস্থ হোটেল টুইন ব্রাদার্সে রুম ভাড়া করে সময় কাটায়। পরে মেয়েটিকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে অভিযুক্ত কিশোর চলে যায়।
জেলা পুলিশ সুপার জানান, তদন্তে প্রথমে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। সেই সূত্র ধরে মেয়েটিকে এবং পরে টঙ্গী থেকে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত কিশোরের দেখানো স্থান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত মাফলার টি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত নারী কারাগারে রয়েছে। আর অভিযুক্ত কিশোরকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply