সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দুপচাঁচিয়ায় ভাগ্নিকে ধ র্ষণের অ ভিযোগে খালু গ্রে ফতার উপজেলা নির্বাচন ২০২৪ নোয়াখালী,বেগমগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ কামারুজ্জামানের সমাধীতে আরসিআরইউ’র শ্রদ্ধা বগুড়ার সেরা ফটোগ্রাফার হিসেবে আইফোন জিতলেন আরিফ শেখ দুপচাঁচিয়ায় জোহাল মাটাইয়ে ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীদের ভাবনায় গৌরবদীপ্ত বিজয় দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে বগুড়ায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেন ফাঁপোর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান বগুড়ায় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার সেন্টার পরিদর্শন দুপচাঁচিয়ায় বিউটি পার্লারে অভিযান জরিমানা

নড়াইলের শিক্ষার আলোয় আলোকিত বিশ গ্রামের ছাত্রছাত্রী সব শর্ত পূরন এমপিও হয়না

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১১৬৭ ভিউ টাইম

উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■ রবিবার (১৭, নভেম্বর) ২৭৪: নিত্য জীবন জ্ঞানকে আলো করা নড়াইলের হবখালী আদর্শ কলেজটি এমপিওভূক্তি না হওয়ায় ২৯জন শিক্ষক-কর্মচারী মানসিক দিক দিয়ে একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় সকল শর্ত পূরল করার পরও এ প্রতিষ্ঠানটি এমপিও না হওয়ায় স্থানীয়রা বিস্মিত হয়েছেন। এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা ২০০০ সালে নড়াইল সদরের হবখালি ইউনিয়নের মাগুরা সড়কের শুবুদ্ধিডাঙ্গা গ্রামে এ কলেজটি স্থাপন করেন। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উľ¡ল রায় জানান, সেই থেকে এ কলেজটি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। দীর্ঘ দিনেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিও না হওয়ায় কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা আলোকদিয়া হতে পারেন নি। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অভাব অনটনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নড়াইল শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে এ কলেজের অবস্থান। পার্শ্ববর্তী নড়াইলের মাইজপাড়া কলেজের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। ওই এলাকার ২০ গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা এ কলেজে পড়ে। এলাকার ৮টি মাধ্যমিক ও ৭টি দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে এ কলেজে ভর্তি হয়। সকল শর্ত পূরণ সহ ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ায় ২০০৫ সালে কলেজিট একাডেমিক স্বীকৃতি পায়। ওই কলেজে গিয়ে দেখা যায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সত্বেও শিক্ষক-কর্মচরীরা বিষনś মনে শেণিপাঠ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষ বিএম বুলবুল ইসলামের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪’শ। ইতোমধ্যে এ কলেজ থেকে পাস করে বহু শিক্ষার্থী দেশের বিভিনś বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে। আবার অনেকে দেশ-বিদেশে সম্মানজনক পদে চাকুরী করছেন। অনেকে শিক্ষার্থীর ভাগ্যের চাকা ঘুরে সমাজে সার্থক ও সুন্দরভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাদের সামনেই ˆদন্যদশা নিয়ে পাঠদান করে চলেছেন তাদের শিক্ষাগুরুরা। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে একটি মাত্র স্বপś নিয়ে নিরলসভাবে পাঠদান করে যাচ্ছিলেন শিক্ষকবৃন্দ। সম্প্রতি ঘোষিত এমপিও’র তালিকায় নাম না থাকায় মুষড়ে পড়েন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ভেঙ্গে যায় তাদের জীবনের একমাত্র স্বপś। ঘোষনার সংবাদ পেয়ে সকল শিক্ষক-কর্মচারী সমস্বরে ডুকরে কেঁদে উঠেন। জীবনের সবকিছু মিথ্যা মনে হয়। কোন কোন শিক্ষক প্রলাপ বকতে থাকেন। একে অপরকে শান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন। হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরনা হয়। এমপিও না পাওয়ার শোক তাদের কাছে পুত্র শোকের চেয়ে বড় শোকে পরিণত হয়। ভগś হৃদয়ে বহুপ্রতিক্ষীত ও স্বপেśর প্রতিষ্ঠান তারা আঁকড়ে আছেন ঠিকই, মনোবল একেবারেই ভেঙ্গে গেছে। তাঁরা এতো দিন পরিবারকে যে শান্তনা দিয়ে এসেছিল,তাও মিথ্যা হয়ে যাওয়ায় পরিবারের কাছেও ছোট হয়ে গেছেন। তাই তাদের জীবনের সকল হিসাব নিকাশ মিথ্যা হয়ে গেছে। পরিবার,সমাজ,কলেজ সবখানেই তাঁরা নিজেদের মনের কাছে চরম অবহেলিত ও অসহায়ত্বের মধ্যে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে কোন শিক্ষক স্বাভাবিক ভাবে পাঠদান করতে পারেন না,এমন চিন্তা চেতনা থেকে বিনা বেতনের এ চাকুরী ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক ইবরাহিম হোসেন। তিনি কানśাজড়িত কণ্ঠে বিডি খবরকে জানান, খুব আশাছিল এমপিও ছাড়লে পরিবারের মুথে হাসি ফুটাতে পারবেন, তা যখন হলো না এ চাকুরী দিয়ে আর কি হবে? না খেয়ে অসুস্থ শরীরে পাঠদান হয় না। তাই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর উপায় কি? যুক্তিবিদ্যার শিক্ষক শারমীন সুলতানা বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়াচ্ছেন, একটি মাত্র স্বপś নিয়ে। সম্মানজনক পেশায় থেকে দেশ ও সমাজের সেবা করবেন,দক্ষ মানুষ গড়ার কারিগর হবেন। কিন্তু সম্প্রতি ঘোষিত এমপিও তালিকায় নাম না থাকায় সব আশা আকাংখা ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেছে। তাই ওই প্রতিষ্ঠানে মেধা,সময় ও শ্রম ব্যয় করার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না যুক্তিবিদ্যার এ শিক্ষক। ইংরেজি শিক্ষক পলাশ সোম জানান, রোদ, বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে সকলে মিলে নিয়মিত শ্রেণি পাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। অর্থাভাবে ঠিকমত চিকিৎসা নিতে পারেন না। সম্মানজনক পেশায় থাকায় নিজেদের ˆদন্যদশার কথা বলতে পারেন না। মাস শেষে অন্যান্য চাকুরীজীবীরা বেতন পেলেও তারা পান না। দোকানের বাকি টাকা দিতে পারেন না। নন এমপিও শিক্ষক জেনে দোকানী বাকি দিতে চান না। স্ত্রী সন্তানের কোন আবদার পূরণ করতে পারেন না। এ বড় বিপর্যস্ত জীবন। এ দূর্বিসহ জীবনের মুক্তির অপক্ষোয় মহাদুশ্চিন্তায় ভুগছেন মহান শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত এই শিক্ষক। কলেজের অধ্যক্ষ বিএম বুলবুল ইসলাম বিডি খবরকে বলেন,তিনি একটি মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিও শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খুব সামান্য বেতনে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সুখেই ছিলেন। এলাকার বিদ্যানুরাগীদের অনুরোধে সেই চাকুরী ছেড়ে সম্মান ও বেশি বেতনের আশায় এ কলেজের অধ্যক্ষ হন। কিন্তু বিধাতা বিমুখ। দীর্ঘ দেড় যুগেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হলো না। স্ত্রী ও ৪ কন্যা নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে বলে নিজের জীবনের দুঃখ কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কানśায় ভেঙ্গে পড়েন। এ কলেজের জিবি’র সভাপতি ও নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বিডি খবরকে জানান কলেজের শিক্ষকদের দুরাবস্থা দেখলে খুব খারাপ লাগে। এমপিওভূক্ত হবার সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও এমপিওভূক্ত না হওয়ায় তিনি হতাশ ও হতবাক হয়েছেন বলে জানান। তিনি আরোও বলেন অনেক দূর্বল প্রতিষ্ঠান এমপিও হয়েছে সেই হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পূর্নবিবেচনা করা উচিৎ। তা-না হলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যাবে। তাতে গ্রামাঞ্চলে শিক্ষা প্রসার চরম বাঁধাগ্রস্থ হবে।

দয়াকরে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরী আরো খবর...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

Developed By VorerSokal.Com
newspapar2580417888