রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে কৃষকের কার্ড ভাড়া নিয়ে সিন্ডিকেট চক্র সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে (গুদাম) ধান সরবরাহ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ, চলতি মৌসুমে অনিয়ম-দূর্নীতি ঠেকাতে লট্রারির মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকের কাছে থেকে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হলেও সংশ্লিস্ট ব্যাংক ও খাদ্যভিাগের একশ্রেণীর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে তা অঙ্কুরেই বিনস্ট হতে চলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সোনালী ব্যাংক ও খাদ্যবিভাগের একশ্রেণীর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নেপথ্যে মদদে সিন্ডিকেট চক্র কৃষকদের বঞ্চিত করে ধান সরবরাহ করছে।
এতে কৃষিবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষক সমাজকে সহায়তার সকল প্রচেস্টা ব্যর্থ হতে চলেছে।
সূত্র জানায়, নীতিমালা অনুযায়ী লট্রারি বিজয়ী কার্ডধারী কৃষকদের স্বশরীরে খাদ্যগুদামে উপস্থিত হয়ে ধান সরবরাহ করে ডাব্লিউকেসি গ্রহণ ও সংশ্লিস্ট ব্যাংকে একাউন্ট খুলে টাকা উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিস্ট কৃষক ব্যতিত কোনো অবস্থাতেই একজনের কার্ড নিয়ে অন্যজন থাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ,ডাব্লিউকেসি গ্রহণ ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না।
কৃষকদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও খাদ্যবিভাগের একশ্রেণীর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নেপথ্যে মদদে সিন্ডিকেট চক্র এক সঙ্গে ২০ থেকে ৩০ জন কৃষকের কার্ড দিয়ে ধান সরবরাহ, ডাব্লিউকেসি গ্রহণ ও ব্যাংক একাউন্ট খুলে টাকা উত্তোলন করছে। কৃষকরা জানান, ব্যাংক ও খাদ্যবিভাগের সহায়তা ব্যতিত একজনের কার্ড দিয়ে অন্যজনের ধান সরবরাহ ও টাকা উত্তোলনের কোনো সুযোগ নাই। এখন প্রশ্ন হলো তাহলে সিন্ডিকেট চক্র কি যাদুর বলে এমন অলৌকিক কাজ করছে।
স্থানীয় কৃষকদেন সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিন্ডিকেট ব্যতিত সাধারণ কৃষকরা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে ও থাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে গেলে তাদের অজুহাতে হয়রানী করা হচ্ছে এতে তারা নিরুৎসাহিত হয়ে বাধ্য হচ্ছে সিন্ডিকেটের কাছে কার্ড ভাড়া দিতে। এলাকার কৃষকরা সরাসরি তাদের কাছে থেকে ধান কেনা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সাংসদ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে সিন্ডিকেট চক্র কৃষকের কার্ড ভাড়া নিয়ে জনৈক সেলিম নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে ২০ টাকা কেজি দরে ধান কিনে সরবরাহ করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে তানোর সদরের সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে (খাদ্যগুদাম) লট্রারি বিজয়ী কৃষকের কাছে থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে প্রায় এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তানোরের আদর্শ ও স্বর্ণপদক প্রাপ্ত কৃষক নূরমোহাম্মদ ৫৫ বলেন, আওয়ামী লীগ কৃষিবান্ধব সরকার এ কথা সত্য। সরকার কৃষকের ফসলের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নিলেও এসব সিন্ডিকেট চক্রের কারণে তা ব্যাহত হতে চলেছে।
তানোর সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা (ম্যানেজার) আসাদুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হয় একজন ব্যক্তি একাধিক কৃষকের নামে একাউন্ট খুলে একাধিক কৃষকের ডাব্লিউকেসি দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করছে এটা অনিয়ম কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিককে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, কোথায় অনিয়ম হচ্ছে সেটা প্রমাণ করেন।
তিনি বলেন, তিনি সাংবাদিক রুশোর বন্ধু তায় তাকে নিয়ে কিছু উল্টাপাল্টা লেখালেখি করলে তিনি তাকে দেখে নিবেন। এ বিষয়ে তানোর সদর খাদ্য গুদামের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা তারিকুজ্জামান বলেন, ধান ক্রয়ে অনিয়মের কোনো সুযোগ নাই।
কারণ কেবল মাত্র লট্রারি বিজয়ী কৃষকের কাছে থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। একই ব্যক্তি একাধিক কৃষকের কার্ড দিয়ে ধান সরবরাহ ও ডাব্লিউকেসি গ্রহণ করছেন এটা নিয়ম লঙ্ঘন কি না তিনি এই প্রশ্নের কোনো সদোত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু বলেন, ধান ক্রয়ে সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নাই, তিনি বলেন, যদি কেউ এমন করে তাহলে অভিযোগ পাওয়া মাত্র তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply