হাসান মাহমুদ, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : বর্ষায় দুই কূল ভাসিয়ে নেওয়া যমুনা শুষ্ক মৌসুমে ধু ধু বালুচর। আর এ যমুনার বুকে জেগে উঠা বালুচর অবহেলিত মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম অবলম্বন। রাক্ষুসে যমুনার ভাঙা-গড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা মানুষগুলো বালুচরে দীর্ঘদিন ধরে চীনা বাদামের চাষ করে আসছেন। চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলগুলোতে বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তাই চরের কৃষকরা বাদামকে আদর করে এর নাম দিয়েছেন ‘গুপ্তধন’।

(
সরজমিনে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, নাগরপুর ও কালিহাতীর চরাঞ্চলে এবার বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষি অফিস নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দিলে ফলন আরও ভালো হতো বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তারপরও দাম মোটামুটি ভালো হওয়ায় হাসির ঝিলিক দেখা গেছে কৃষকদের মধ্যে। এলাকার হাটবাজারগুলোতে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকায়। প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে কৃষকের খরচ হয়েছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। অধিকাংশ জায়গায় ঢাকা-১ ও ডিজি-২ জাতের চীনা বাদামের চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় বাদাম উৎপাদন হচ্ছে ১০ থেকে ১২ মণ। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি কৃষকের লাভ হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তারপরও কৃষকদের অভিযোগ টাঙ্গাইলে সরকারিভাবে কোনও বাদাম ক্রয়কেন্দ্র নেই। তাই বাধ্য হয়েই ফড়িয়া ও দালালদের কাছে বিক্রি করতে হয়। এতে করে কাঙ্খিত দাম পান না তারা। সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে আরও লাভবান হতে পারতেন তারা।

কৃষক ফরিদুল ইসলাম বাবু, মোশারফ হোসেন, আব্দুল খালেকসহ অনেকেই জানান, খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। কৃষি অফিসের নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ পেলে ফলন আরও ভালো হতো। এতে তারা আরও বেশি লাভবান হতে পারতেন।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, টাঙ্গাইলে এবার দুই হাজার ২৭২ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩০৪৪ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক তদারকির কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বাদাম উৎপাদন হয়েছে।
এই ক্যাটাগরী আরো খবর...
Leave a Reply