মিলন হোসেন / স্টাফ রিপোর্টার :
ব্যস্ততম শহর বগুড়ার পথচারীদের নিত্য দিনের সঙ্গী যানজট। যানজট জিবন যেন যায় যায় অবস্থা। অবৈধ পার্কিং আর অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার কারণে শহরের ইয়াকুবিয়ার মোড়, থানার মোড়, কাঠালতলা, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, মাটিডালি বিমান মোড়, বনানী, চারমাথায় প্রতিদিনিই লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বগুড়া শহরের সাতমাথায় জেলা স্কুলের প্রাচীর সংলগ্ন একটি গ্যারেজ রয়েছে। সেখানে হাতেগোনা কয়েকটা মাইক্রো রাখা হয়। যা পৌর কর্তপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে ভাড়া নেয়া হয়েছে। সপ্তপদী মার্কেটের প্রধান গেটের সামনে যত্রোতত্রো ভাবে রাখা হয়েছে মোটর সাইকেল। সাতমাথা থেকে শুরু করে থানারোড পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে সারি করে রাখা হয়েছে মোটর সাইকেল এবং প্রাইভেট কার আর তার সাথে তো ভ্রাম্যমান হকাররা তো আছেই । বিভিন্ন অফিস এবং শপিংয়ের সামনের রাস্তায় নো পার্কিং সাইনবোর্ড লেখা থাকলেও ঠিক সেখানেই পার্কিং করে রাখা হয়। বগুড়া শহরে নিউ মার্কেট, ঝাউতলা, বড়গোলা ও দত্তবাড়ীতে মোট ৭টি গ্যারেজ থাকলেও, মোটরচালক এবং প্রাইভেট কারের মালিকেরা গ্যারেজে না রেখে রাস্তার পাশে রেখে সৃষ্টি করে দীর্ঘ যানজটের। বগুড়া শহরে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লোহার শিকল বাধিয়ে রাখতো পার্কিংকৃত যানবাহনগুলো। কিন্ত সেসব এখন আর চোখে পড়ে না। বিকেলে শহর জুড়ে রাস্তা দখল করে দুপাশে বসে বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের অস্থায়ী দোকান। তাও আবার সেইটা খোদ সাতমাথায় অবস্থিত মুজিব মঞ্চের সামনে ।
বড়গোলায় রড ও টিনের মালামাল লোড আর আনলোডের কারণে সৃষ্টি হয় যানজটের। মেডিক্যাল রোড, তিনমাথা, চারমাথায় সড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্যও সৃষ্টি হয় যানজট।
অপরদিকে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়ায়। চিকন চাকার এই রিক্সাগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ব্রেক ব্যবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এমনকি এই অবৈধ রিক্সার কারণে প্রতিদিনই শহর জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে অতিগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দত্তবাড়ি থেকে শুরু করে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা পর্যন্ত লেগে থাকে যানজট।
বেশ কিছু পথচারীর সাথে কথা বললে তারা জানান , “বড়গোলা থেকে সাতমাথায় পৌঁছাতে ত্রিশ মিনিট সময় লাগে। শুধুমাত্র যানজটের কারণে। যানজটের মূল কারণ অবৈধ ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা। অটোচালকেরা দ্রুত গতিতে চলাচল করে। নিয়ন্ত্রণ করার মতো কোন ব্যবস্থা নাই। সামনের চাকায় ব্রেক ধরে, কিন্ত পিছনে কোনও ব্রেক নাই।”
বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের (টিআই) ইন্সপেক্টর মো: রফিকুল ইসলাম জানান, “বগুড়ার যানজটের মূল কারণ হচ্ছে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা এবং অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং। প্রতিদিন অবৈধ পার্কিং এবং অবৈধ রিক্সা আটক করা হচ্ছে। আগস্ট মাসে ৫৩ লাখ টাকা রাজস্ব জমা হয়েছে। এই অবৈধ রিক্সার সমাধান একদিনে বন্ধ করা সম্ভব নয়। প্রয়োজনের তুলনায় তিনগুণ রিক্সা চলাচল করছে শহরে। আমরা এই অনিয়ন্ত্রিত রিক্সার চাপে হিমশিম, আবার কিছুটা জনবল সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। আমাদের ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। বিশেষ করে সন্ধ্যায় ফুটপাতগুলোতে দোকান বসতে দেয়া হচ্ছে না। বগুড়া জেলা প্রশাসক এবং বগুড়া পৌরসভা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পৌরসভা এসব রিক্সাগুলো নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসবে।”
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply