মিলন হোসেন / স্টাফ রিপোর্টার :
বগুড়া বিসিকের দুই নৈশ প্রহরী খুনের ঘটনায় ০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। চুরির বিষয়টি জেনে যাওয়ায় এই জোড়া খুন করা হয় । তবে গ্রেফতার হওয়া তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে দাবি পুলিশের।
আজ রোববার ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
গত শনিবার ঢাকা ও বগুড়ায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রডসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
গত শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়া ফুলবাড়ী এলাকাতে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্প নগরীর মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বর্জ্য জল অপসারণের ট্যাংক দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজের নৈশ প্রহরী ছিলেন।
গ্রেফতাররা হলেন, বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার চকলোকমান এলাকার বাসিন্দা হোসাইন বিন মিল্লাত ওরফে নিনজা (৩৪ )। মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজের পিকআপ চালক ছিলেন তিনি। বাকী দুজন আসামী হলেন, সদরের বারুলী তালপট্টি এলাকার সুমন ব্যাপারী (২৭) ও রাহাত (২১)।
সুমনকে ঢাকা গাজীপুর ও বাকি দুজনকে বগুড়া সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, পিকআপ চালক মিল্লাত তার সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে মেসার্স মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে বিভিন্ন সময়ে মালামাল চুরি করে বাহিরে বিক্রি করেন। নিহত দুই নৈশ প্রহরী তাদের চুরির বিষয়টি জেনে যান এবং তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। ফলে দুই নৈশ প্রহরী মালিককে বিষয়টি জানিয়ে দিবে এমন আশঙ্কা থেকে তাদেরকে খুন করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক কর্মচারী সুমন ব্যাপারী জোড়া হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন । ওই কারখানার পিকআপের চালক হোসাইন বিন মিল্লাত নিনজা ও রাহাত গত বুধবার ২৩ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার সাতমাথা এলাকার শহীদ খোকন পার্কে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার ভোরে তারা একত্র হয়ে কারখানায় প্রবেশ করেন এবং কাঁচামালের ডেলিভারি থাকায় কারখানায় প্রবেশ করতে কোনো সমস্যা হয়নি তাদের । হত্যাকাণ্ডের সফল হতে তাদের সঙ্গে আরও দুজন যোগ দেন।
পুলিশ আরো জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক প্রথমে কৌশলে নৈশ প্রহরী আব্দুল হান্নানকে কারখানার বর্জ্য জল অপসারণের ট্যাংকের কাছে নিয়ে যান তারা। সেখানে পেছন থেকে রড দিয়ে হান্নানের মাথায় আঘাত করা করে, এতে হান্নান ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তার মৃতদেহ বর্জ্য জল অপসারণ ট্যাংকে ফেলা হয়। পরে একই কৌশলে আরেক নৈশ প্রহরী শামছুলকে হত্যা করে ওই ট্যাংকেই ফেলা হয় তার মৃতদেহ। পরে হত্যাকারীরা নিহত হান্নানের মুঠোফোন হেফাজতে নেন। পরবর্তীতে সুমন ব্যাপরীকে ঐ মুঠোফোন দিয়ে বলা হয় গাজীপুরে চলে যেতে বলেন পিকআপ চালক হোসাইন বিন মিল্লাত নিনজা। পরিকল্পনা মোতাবেক নিহত হান্নানের মুঠোফোন ব্যবহার করে দুই নৈশ প্রহরীর মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা চেয়ে কারখানার পরিচালককে মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়। দুজনকে খুন করে এভাবে অপহরণ নাটক সাজিয়ে ছিলেন তারা।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Leave a Reply